মৃত্যুর পরেও মানুষের মস্তিষ্ক হয়তো কয়েক ঘণ্টা নয়, বরং কয়েক দিন পর্যন্ত টিকিয়ে রাখা সম্ভব।

কেমন হতো যদি মৃত্যু জীবনের শেষ না হয়ে, চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়ে তোলার মতো কোনো ঘটনা হতো? এনওয়াইইউ (NYU) ল্যাঙ্গোন মেডিকেল সেন্টারের ডা. স্যাম পারনিয়া চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমন এক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা আমাদের বহুদিনের পুরনো বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ করছে। সেই বিশ্বাসটি হলো—মৃত্যুই জীবনের শেষ।

মৃত্যুর খুব কাছাকাছি অবস্থা নিয়ে দীর্ঘ ৩০ বছর গবেষণার পর ডা. পারনিয়া দাবি করছেন যে, মানুষের মস্তিষ্ক মৃত্যুর পর শুধু কয়েক মিনিট নয়, বরং কয়েক দিন পর্যন্ত সচল বা পুনরুজ্জীবিত করার উপযোগী থাকতে পারে। তাঁর গবেষক দল এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনা রেকর্ড করেছেন, যেখানে রোগীরা চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় মৃত ঘোষিত হওয়ার এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর জ্ঞান ফিরে পেয়েছেন, এমনকি তাঁদের স্মৃতিও ফিরে এসেছে। সাধারণ চিকিৎসা ব্যবস্থায় যা একরকম অসম্ভবই মনে করা হতো।

ডা. পারনিয়ার এই যুগান্তকারী গবেষণায় ব্যবহার করা হচ্ছে একমো (ECMO) মেশিনের মতো উন্নত প্রযুক্তি এবং বিশেষ ধরনের “সিপিআর (CPR) ককটেল”। এই ককটেল মূলত বিভিন্ন ওষুধের মিশ্রণ, যা শরীরকে পুনরায় চালু করতে এবং মস্তিষ্ককে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

এই চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো এমন এক ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে মৃত্যুকে একেবারে শেষ পরিণতি না ভেবে, একটি গুরুতর কিন্তু নিরাময়যোগ্য আঘাত হিসেবে দেখা হবে। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আছে এবং এটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে, তবুও এই গবেষণা আমাদের চেতনা, জীবন এবং বেঁচে থাকার সীমানা সম্পর্কে ধারণাকে নতুন রূপ দিচ্ছে।

ডা. পারনিয়া যদি সঠিক হন, তবে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান হয়তো ‘মৃত্যু’র সংজ্ঞাটাই পুরোপুরি বদলে ফেলার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।

নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ল্যাঙ্গোন মেডিকেল সেন্টারের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্যাম পারনিয়ার মতে, “মৃত্যু সম্পর্কে আমাদের বিশ্বাস বা ধারণাটি মৌলিকভাবে ভুল।”

তিনি বলেন, মৃত্যু কোনো সমাপ্তি নয়, বরং এটি একটি “পরিবর্তনযোগ্য অবস্থা” (reversible state)।


সোর্সঃ Lucid Dying: The New Science Revolutionizing How We Understand Life and Death – by Sam Parnia MD PhD