রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি - হইচই টিভি সিরিজ রিভিউ
-
কাহিনী
-
অভিনয়
-
সিনেমেটোগ্রাফী
-
মিউজিক
রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলেও এখানে খেতে আসতেন না -
মফস্বলের এক শহরে এক আগন্তুকের আগমন দিয়ে গল্পের শুরু হয় অনস্ক্রীনে। এরপর সে খোঁজখবর নেয়া শুরু করে “রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি” – এই রেস্টুরেন্টের মালিক মুসকান জুবেরী সম্পর্কে। কোন একটা অদ্ভুত কারনে এই মহিলার চারপাশে ঘিরে আছে অদৃশ্য একটা রহস্যের জাল।
সাংবাদিকের ছদ্মবেশে আসা নিরুপম চন্দ্র কি পারবে এই রহস্যের জাল ছিড়ে বের হতে?
প্রথম পর্বঃ আগষ্ট ১৩, ২০২১
ভাষাঃ বাংলা
জেনারঃ থ্রিলার
ডিরেক্টরঃ সৃজিত মুখার্জী
নেটওয়ার্কঃ হইচই
কম্পোজারঃ জয় সরকার
এই টিভি সিরিজের নাম দেখে চমকানোর কিছু নেই। এই নামে নাজিমুদ্দিনের একটা থ্রিলার উপন্যাস আছে। খুব উঁচুদরের থ্রিলার না হলেও নাজিম উদ্দিন একজন সুলেখক। তার এই থিলার বিভিন্ন লুপহোল সহই পড়তে খারাপ লাগার কথা নয়। তবে তিনি গল্প অযথা টেনেছেন আর থ্রিলিং এক্সপেরিয়েন্সের যথেষ্ট অভাব বোধ করেছি।
ফিরে আসি টিভি সিরিজের গল্পে। আপনি অভিনেতা আর অভিনেত্রীদের লিস্ট দেখুন, আজমেরী হক বাঁধন, রাহুল বোস, অঞ্জন দত্ত, অনির্বান ভট্টাচার্য সবাই অভিনয় জানা লোক। কিন্তু তারপরেও এই টিভি সিরিজ দেখে খুব একটা বিমোহিত হইনি।
চারিদিকে এর নামডাক শুনে বেশ আয়োজন করেই বসেছিলাম টিভি সিরিজ দেখতে। শুরুর গ্রাফিক্স আর থিম সং বেশ ভালো লেগেছে। মাঝে রবীন্দ্র সংগীতের একটু ছোঁয়া, শাড়ির আচঁল ছেড়ে দিয়ে এক নারীর পেছন থেকে হেঁটে যাবার দৃশ্য আর অকারনেই মডেলের মত কোমর বেঁকিয়ে ভাঙ্গা দালানে পোজ দেয়া – সব কিছু রহস্যময়তা তৈরি করতে না পারলেও আগ্রহ যথেষ্ট জন্মাতে পেরেছে।
কিন্তু হতাশ হয়েছি পরিচালকের ছ্যাবলামিতে। একেতো এই বইয়ের মূলগল্পে যথেষ্ট লুপহোল আছে, তারপর যথাযথ ভাবে কোন এপিসোড কোথায় শেষ করলে ভালো হবে সেটা না জানা, আর ঘটনার ভাষ্য অকারনে প্রলম্বিত করার কারনে খেই হারিয়ে ফেলতে হয়।
রহস্য না থাকলেও সেটাতে রহস্যের প্রলেপ দেয়াটা আসলে বেশ কষ্টের। সৃজিত এখানে ব্যার্থ হয়েছেন।
প্রথমদিকে মনে হয়েছিল এই সাংবাদিক জানতে চান, রেস্টুরেন্টের খাবার আসলেই এত মজা কেন? সবাই এখানে খেতে আসে কেন? তারপর হঠাত করে ঘটনার মূল কারন ঘুরে দাঁড়ায় নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে। আমাদের রিপোর্টার/গোয়েন্দা ধরে নেন এতে মুসকান জুবেরির হাত আছে।
এত কিছুর পরেও কিন্তু খাবার নিয়ে মুসকানের একটা অযথা বর্ননা আছে গল্পে। কেন রেস্টুরেন্ট দিয়েছেন সেটার বর্ননা আছে। আন্দিজে প্লেন দূর্ঘটনার দূর্বল বর্ননা আছে। সেখানকার অভিনয় জঘন্য হলেও জোড়াতালির চেষ্টা হয়েছে।
মানুষের মাংস খেয়ে মুসকান জুবেরী যৌবন লাভ করেছে বা দীর্ঘায়িত করেছে, এই রকম বাজে একটা যবনিকা না টেনে আরো ভাল কিছু, বা রহস্যময় কিছু বানানো যেত।
এই সিরিজে বাঁধনের অভিনয় ভালো লাগেনি আমার কাছে অযথা হাসি দিয়ে রহস্যময়ী হবার চেষ্টা, তবে রাহুল বোস বরাবরই ক্যারিশমেটিক, অঞ্জন দত্ত নিজের অভিনয়ে সপ্রতিভ ছিলেন। সিরিজে একবার সৃজিত মুখার্জির চেহারাও দেখা গেছে, তার এক্সপ্রেশনই সব থেকে অপরিপক্ক লেগেছে আমার কাছে।
অল্প কথায় শুনতে চান?
মনে হচ্ছে অযথা রাবার টেনে লম্বা করা হয়েছে আর হঠাত করে একটা সম্ভাবনাময় গল্পের খুন করা হয়েছে। লেখক নাজিমুদ্দিনের বই পড়ে তাও কিছুটা সময় কেটে যাবে, কিন্তু টিভি সিরিজ দেখার পর আরো বেশি হতাশ হবেন।
ভালো লাগলো