মহাবিশ্বের সব থেকে বড় তারা কোনটা?
এ প্রশ্ন কি কখনো মাথায় এসেছে?
আমাদের চেনা মহাবিশ্বের পরিধি অত্যন্ত ক্ষুদ্র। সূর্য কেন্দ্রিক এই সভ্যতার বাইরে আমরা খুব বেশিদূর দেখতেও পারিনি। কোনদিন দেখতেও পারব ও না! আমাদের সভ্যতা ততদিনে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আশপাশের সব গ্যালক্সিগুলো এতদূরে বিলিন হয়ে যাবে যে আমরা মিল্কিওয়েতে একাই পড়ে থাকব। সে অন্যদিনের আলাপ 🙂
আমাদের সূর্য কিন্তু বড় তারকাগুলোর একটা নয়। বরঞ্চ নিরানন্দ সাইজের একটা তারা যা হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়ামে ফিউশন করেই যাচ্ছে। আরো পাঁচ বিলিয়ন বছর পরে যখন এর হাইড্রোজেন কমে যেতে থাকবে তখন ধীরে ধীরে সূর্য পরিনত হবে লাল দৈত্যকার তারায় (Red Giant)।
আমরা যতদুর দেখতে পেরেছি তাতে এখনও পর্যন্ত সব থেকে বড় তারাটির নাম ইউ ওয়াই স্কুটি (UY Scuti)। এর ব্যসার্ধ সূর্যের থেকে ১৭০০ গুন বড় আর ১০০০ বেশি সূর্যকে অনায়াসে এর ভেতরে ভরে ফেলা যাবে।
UY Scuti আমাদের থেকে ৯৫০০ আলোকবর্ষ দূরে আছে আর এর অবস্থান মিল্কিওয়ের প্রায় কেন্দ্রের দিকে, পার্সিয়াস নক্ষত্র পুঞ্জে (constellation Scutum)।
এই গ্যালাক্সির অন্য তারাদের তুলনায় আমাদের সূর্য আদতে বৈশিষ্ঠহীন একটা মাঝারী মানের তারকা। আর সময়ের বিচারে আমরা তার থেকেও নগন্য।
সূর্য কিন্তু জ্বলছে না
জীবন ধারনের জন্য আমাদের অক্সিজেনের প্রয়োজন। শুধু মানুষ নয়, পৃথিবীর তাবৎ প্রানীকুলেরই দরকার।
জানেন কি এই অক্সিজেনের মূল উৎস কি? কোথা থেকে আসে পৃথিবীর এই বিশাল অক্সিজেন?
সমুদ্র…!
বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীর অক্সিজেনের ৫০ থেকে ৮০ ভাগই উৎপন্ন হয় সমুদ্র থেকে। সামুদ্রিক শৈবাল, প্ল্যাঙ্কটন, জলজ উদ্ভিদ এরা ফটোসিন্থেসিস প্রক্রিয়ায় এই অক্সিজেন উৎপন্ন করে।
তাই বলে সব গাছ কেটে ফেলবেন? ভুলেও না, কারন সমুদ্রে থেকে উৎপন্ন অক্সিজেনের বেশিরভাগই আবার সামুদ্রিক প্রানীদের কাজে লাগে। শৈবাল অক্সিজেন উৎপন্ন করে ঠিকি, কিন্তু এরা যখন আবার পঁচে তখন তার থেকে বেশি অক্সিজেন খরচ করে ফেলে।
অক্সিজেনের আরেকটা মজার বিষয় হল, এটা আগুন জ্বালাতে সাহায্য করে। সূর্যে কোন অক্সিজেন নাই। তার মানে সেখানে আসলে কোন আগুন জ্বলছে না। সূর্য থেকে আমরা যে তাপ আর আলো পাই তা একটা ফিউশন বিক্রিয়া।
হাইড্রোজেনের নিউক্লিয়াস ফিউজড হয়ে হিলিয়াম উৎপন্ন করে, সেই সাথে কিছু শক্তি (আলো এবং তাপ হিসেবে) ছেড়ে দেয়। এই প্রক্রিয়া অনবরত এত বিশাল পরিমানে হচ্ছে বলেই সূর্য আলো দেয়, তাপ দেয়।
কাজেই স্কুলে যদি বলে থাকে সূর্য জ্বলছে তবে ভুল বলেছে।
স্টমাক এসিড এর তীব্রতা কত?
এসিডের তীব্রতা মাপা হয় pH স্কেল দিয়ে। ১ থেকে ১৪ এর মধ্যে সাধারনত এসিডের স্কেল মাপা হয়। যত কম pH তত বেশি তার তীব্রতা।
জানেন কি, আমাদের পাকস্থলীর এসিডের লেভেল ১ থেকে ২ এর মধ্যে! এর মানে এই এসিড ব্লেড পর্যন্ত গলিয়ে দিতে পারে। যদি আপনি একটা ব্লেড ও গিলে ফেলেন তবে পাকস্থলী পর্যন্ত তা পৌঁছুতে পারলে ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে আপনার পেটে সেটা হজম হয়ে যাবে!
সূত্রঃ রিডার ডাইজেস্ট।
পৃথিবীর পানির হিসাব নিকাশ
পানির অপর নাম জীবন। প্রানের উৎপত্তি ধারনা করা হয় এই পানি থেকেই শুরু হয়েছিল। আমাদের পৃথিবীর তিনভাগ জল আর একভাগ স্থল একথাও নিশ্চই শুনে এসেছেন ছোটবেলা থেকে।
জানেন কি সেই পানির মাত্র শতকরা তিনভাগ পানের যোগ্য, মানে সুপেয়। পৃথিবীর পানির এই বিশাল অংশই আছে সুমদ্রে (৯৬%), যেটা আমাদের পানের অযোগ্য।
আরো মজার বিষয় হল এই সুপেয় পানির বেশিভাগই জমে আছে মেরুতে বরফের স্তর, গ্লেসিয়ার আর থার্মাফ্রস্ট হিসেবে। সুপেয় পানির প্রায় ৬৮.৭ ভাগই মেরু অঞ্চলে বরফ অবস্থায় আছে। আর কিছু আছে মাটির নিচে যেখান থেকে আমরা ডিপ টিউবওয়েল বসিয়ে পানি উত্তোলন করি।
প্রানের উৎপত্তি কেন পানি থেকে হয়েছে বলে ধরা হয় তার বিশাল ব্যখ্যা আছে। সেদিকে না গিয়ে আরো মজার কিছু তথ্য জেনে নিন।
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরের ৬০% পর্যন্ত পানি থাকে। এইচ এইচ মিচেল, জার্নাল অফ বায়োলজিক্যাল কেমিস্ট্রি (H.H. Mitchell, Journal of Biological Chemistry 158) এর মতে, মস্তিষ্ক এবং হৃদপিণ্ড ৭৩% পানির সমন্বয়ে গঠিত এবং ফুসফুস থাকে প্রায় ৩% পানি। আমাদের ত্বক ৬৪%, পেশী এবং কিডনি ৭৯% পানির সমন্বয়ে গঠিত, এমনকি আমাদের হাড়গুলির ৩১% পানি।
পানিই জীবন।