বর্তমানে সবাই আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্যে থেকে প্রবাহিত হচ্ছি। আমরা যারা শিক্ষার্থী রয়েছি তারা প্রায় দেড় বছরের মতো সময় ধরে বাসায় বসে রয়েছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে, বন্ধ রয়েছে ভর্তি পরীক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরীক্ষাগুলোও। এমতাবস্থায় আমাদের আসলে কি করনীয়? আমি এখানে আমার কিছু নিজস্ব মতাদর্শ এবং মতামত তুলে ধরার চেষ্টা করছি। হয়তোবা আমার এই মতাদর্শের সাথে অধিকাংশেরই মতাদর্শ সম্পূর্ণরূপে কিংবা কোনো অংশেই মিলবে না। আমি প্রত্যেকের মতাদর্শকেই সম্মান প্রদর্শনপূর্বক আমার ব্যক্তিগত মতাদর্শ ব্যক্ত করছি।
প্রথমত, এই করোনা মহামারীর উপরে আমার কোনো হাত নেই। আমি চাইলেই এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতেপারবোনা। তাই এটি নিয়ে আমি যতই উদ্বিগ্ন হইনা কেন শুধুমাত্র যথাবিহিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ব্যতীত আমাদের হতে বিকল্প আর কোনো রাস্তা খোলা নেই।
যে বিষয়টি আমার হাতে নেই, যেটি আমি চাইলেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবোনা সেটি নিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে কখনোই উদ্বিগ্ন হইনা। এবং এখানে একটি কথা বলা বাহুল্য, আমি এটি মেনে নিয়েছি যে বর্তমানে পড়াশুনা নিয়ে যে যা কিছু হচ্ছে সেটি শুধুমাত্রই আমার একার সাথে হচ্ছে না। এই ব্যাপারটা সামগ্রিকভাবে সবার সাথেই হচ্ছে। সবাই আমরা একসাথে পিছিয়ে যাচ্ছি। আমি এটি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, যেহেতু আমরা সবাই একসাথে পিছিয়ে যাচ্ছি সেহেতু যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিবে তখন যারা আমার সাথে ছিল, আমার সাথে পড়াশুনা করতো এবং করছে তারা কিন্তু আমার সাথেই থাকবে, তারা কোনোভাবেই কিন্তু ইচ্ছে করলেই আমার চেয়ে উপরের শ্রেনীতে পড়াশুনা করতে পারবেনা। সবাই আমরা একই সাথেই অধ্যয়ন করবো।
তাছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা কিংবা বন্ধ করে রাখা এই বিষয়গুলো আমার নিজের হাতে নেই। আমি চাইলেও এটি নিয়ে কিছু করতে পারবোনা। এটি একমাত্র পরিবর্তন করতে পারবে নীতিনির্ধারকগণ। আমি এই ভোগান্তিকে, এই বিষয়গুলিকে বাস্তবতা বলে মেনে নিয়েছি। যারা এই বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে নিজেদেরকে সেভাবেই ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তুলছে, এই সময়গুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগাচ্ছে তারা নিঃসন্দেহে তাদের যেকোনো প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় এগিয়ে থাকবে।
আমি মনে করি এই করোনা আমাদের শিক্ষা জীবনকে যে পরিমাণ ক্ষতির মুখে নিয়ে দাঁড় করিয়েছে এবং এর প্রভাবে ভবিষ্যতে আমাদের জীবন কিভাবে অগ্রসর হবে এই সামগ্রিক বিষয়সমূহকে অনুধাবন করে যারা সেভাবে নিজেদেরকে প্রস্তুত করছে ভবিষ্যৎ যুদ্ধের জন্য তারা নিঃসন্দেহে তাদের যেকোনো একজন প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় জীবনযুদ্ধে এগিয়ে থাকবে।
তাই এই সময়কে যে যতটা কার্যকরভাবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবে সে তার ভবিষ্যৎ জীবনে ততটা সফল হতে পারবে কেননা এখন যে সময়টা চলে যাচ্ছে সেই সময়টা আর ফিরে পাওয়া যাবেনা। আর যারা এই সময়কে ডিপ্রেশন মনে করে হেলায় কাটিয়ে দিচ্ছে তারা একটি সময় ঠিকই তাদের ভুলগুলো অনুধাবন করতে সক্ষম হবে। কারণ এই সময়টাকে অনেকে খুব সুন্দর এবং কার্যকরভাবে ব্যবহার করছে। যারা অলসতায় এই সময়টাকে কাটিয়ে দিচ্ছে তাদের নিকট এখন সবকিছু খুব সহজ মনে হলেও আসলে জীবন এতটা সহজ নয়। আমি আমার স্বল্প জ্ঞানে মনে করি, এতটা হতাশ না হয়ে আমাদের উচিত এই বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা যাতে করে যখন আবার সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে তখন আমার একজন প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে একটু হলেও নিজেকে এগিয়ে রাখা যায়।
পুনশ্চ, আমি এখানে শুধুমাত্রই আমার নিজস্ব মতাদর্শ ব্যক্ত করেছি। কাউকে আমার এই নিজস্ব মতামতকে ব্যক্তিগতভাবে কিংবা নেতিবাচকভাবে না নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। আপনি যদি আমার মতের সাথে একমত হতে না পারেন তাহলে আপনি যে আদর্শ লালন করে আছেন সেভাবে নিজের জীবনকে চালনা করুন কেননা দিনশেষে আপনার জীবনটা আপনারই, আপনাকেই আপনার জীবনকে বয়ে নিয়ে যেতে হবে।
সকলের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।
পরিশেষে, ভালো গুণের চর্চা করুন, নিজে ভালো থাকুন, অপরকেও ভালো রাখুন।
প্রান্তর কর্মকার
ভেটেরিনারি এন্ড এনিনেল সায়েন্সেস বিভাগ,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
লেখক চাইলেই আরেকটু লিখে দিতে পারতেন কিভাবে এই সময়টা সঠিকভাবে তিনি ব্যায় করেছেন। কি কি নতুন জিনিস তিনি শিখেছেন এই সময়ে যা পরবর্তী জীবনে কাজে লাগবে। এটা সত্য যে, সার্টিফিকেটের দরকার থাকলেও কর্মজীবনে অভিজ্ঞতা আর কাজের স্কিলের উপর ভিত্তি করেই আপনার মূল্যায়ন হবে।
আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ। এখানে আমি শুধুমাত্রই আমার নিজস্ব মতাদর্শ ব্যক্ত করেছি এবং আমি কিভাবে এই সময়টাকে কাজে লাগাচ্ছি সেটাও পরিষ্কার করেছি আমার লেখার মধ্যে। একজন পাঠক যদি সঠিকভাবে লেখাটি পড়ে অনুধাবন করতে সমর্থ হয় তাহলে সে অবশ্যই বুঝতে সক্ষম হবেন পুরো বিষয়টি। তাছাড়া মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয় এবং সবার সাথে সবার মতাদর্শের মিল কোনোদিনই হবেনা।
ধন্যবাদ।