Forgotten (2017) - কোরিয়ান থ্রিলার মুভি রিভিউ
Movie title: Forgotten
Movie description: ২১ বছরের সদ্য তরুন জিন সিওক নতুন বাসায় তার বাবা, মা আর ভাইয়ের সাথে এসে পৌঁছায়। প্রথম থেকেই তার মনে হচ্ছিলো বাড়িটাতে কিছু একটা গন্ডগোল আছে।এরপর একদিন বৃষ্টির রাতে তার চোখের সামনেই একদল লোক তার ভাই ইউ-সিউককে কিডন্যাপ করে নিয়ে যায়। ১৯ দিন পরে ফেরত আসে ইউ-সিউওক, কিন্তু মনে করতে পারেনা এই ১৯ দিন সে কোথায় কিভাবে ছিল।অপরদিকে জিন-সিওক তার ভাইয়ের মাঝখানে সুক্ষ একটা পরিবর্তন লক্ষ করতে পারে। তার মনে হয় এটা তার ভাই নয়, ফেরত এসেছে অন্য কেউ।
Date published: November 29, 2017
Country: সাউথ কোরিয়া
Duration: ১ ঘন্টা ৪৮ মিনিট
Author: Hang-jun Jang
Director(s): Jang Hang-jun
Actor(s): Kang Ha-Neul, Yeon Je Hyung, Mu-Yeol Kim, Na-ra Lee, Myung-Ryul Nam , Lee Soon-won, Moon Sung-Keun , Jung Taek-Hyun , Na Young-hee,
Genre: রহস্য, থ্রিলার
-
গল্প
-
অভিনয়
-
সিনেমেটোগ্রাফি
-
মিউজিক
থ্রিলার না হরর বুঝতে বুঝতেই সময় চলে গেল ...
আহা… থ্রিলার যদি হতে হয় তবে এরকম গল্প বলার ভঙ্গি হতে হবে। প্রথমদিকে আমি ভাবতে বাধ্য হয়েছিলাম এটা আসলে একটা হরর মুভিতে পরিনত হতে যাচ্ছে। কিন্তু হরর মুভির চিরাচরিত এলিমেন্ট আর মিউজিক খুঁজে না পেয়ে কিছুটা হতাশ হয়ে যাচ্ছি যখন, ঠিক তখনি গল্প নতুন মোড় নিল।
আমি ধরেই নিয়েছিলাম জিন-সিউক আর তার পরিবারের মাঝে সব কিছু স্বাভাবিক আছে। কিন্তু তার ভাইয়ের কিডন্যাপের পর হটাত করে বদলে যায় দৃশ্যপট। ফুটে ওঠে সমস্যা আসলে তার ভাইয়ের কিডন্যাপিং নিয়ে নয়, মূল সমস্যা জিন-সিউকের ভুলে যাওয়া অতীত নিয়ে।
ছবির প্রথম দিকে আপনি এটাও ভাবতে বাধ্য হবেন জিন-সিউকের কল্পনায় অনেক কিছু ঘটছে। কিন্তু তার পরিবারের বাকি সদস্যদের গা-ছাড়া আচরনে আপনি আবার সন্দিহান হয়ে উঠবেন কিছু একটা গন্ডগোল আছে।
থ্রিলার মনে হয় আসলে এরকম হলেই ভালো হয়, কিছুক্ষন পর পর আপনি নিজের মনেই গল্পের নতুন নতুন ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে থাকবেন আর গল্পের শেষে গিয়ে পুরো ঘটনা বুঝতে পারবেন। যদিও শেষটা আমার খুব একটা ভালো লাগেনি, তবে এর মাঝে দেয়া সুক্ষ মেসেজ ঠিকই ধরতে পারবেন।
Forgotten (2017) – বেশ কবছর আগের ছবি। ইংরেজীতে ডাব করা ভার্সন আমি পাইনি, আমাকে দেখতে হয়েছে কোরিয়ান ভাষার মুভিটাই। সাবটাইটেল দিয়ে দেখেছি বলে বারবার মনযোগ দিতে হয়েছে স্ক্রীনের নিচের দিকে, এর পরেও বলব না ছবি দেখতে একটুও খারাপ লেগেছে।
থ্রিলার গল্প আসলে কিভাবে বলতে হয় এটা ডিরেক্টরের কাছ থেকে শেখার আছে। একটা মিথ্যার জাল ছড়িয়ে গেছেন পুরো গল্প জুড়ে পরিচালক। এরপর যখন একে একে সুতো খুলতে শুরু করে তখন হুট করে ছবি শেষ হয়ে যায়।
২১ বছরের তরুন জিন সিউক তার পরিবার নিয়ে নতুন বাড়িতে ওঠে। এখানে উঠার পরই এই বাড়ির একটা বদ্ধ রুম নিয়ে তার কৌতুহল হতে থাকে। ছবির এই পর্যায়ে এসে আমার মনে হয়েছিল ছবিটা হরর ক্যাটাগরির দিকে যাচ্ছে। কিন্তু নাহ, হুট করে এক বৃষ্টির রাতে তার ভাই কিডন্যাপ হয়ে যায়। পাক্কা ১৯ দিন পরে সে ফেরত এলেও মনে করতে পারে না এই ১৯ দিন সে কোথায় ছিল কি করেছে!
জিন-সিউকের সন্দেহ হয় তার ভাইকে নিয়ে। যে ফিরে এসেছে সে কি আসলেই জিন-সিউক? সে তার মাকে তার সন্দেহের কথা জানায়। এই পর্যায়ে আমিও ধরে নিয়েছি গল্প অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে। আসলেই কি জিন সিউকের ভাই ফেরত এসেছে নাকি অন্য কেউ?
জিন সিউক তার স্ট্রেস কমানোর ঔষধ খাবার কথা ভুলে যায়, এবং পরিচালকের গল্প বলার ঢং এ একটা সময়ে আমার মনে হয়েছে এসবই আসলে তার মস্তিষ্কের কল্পনা।
কিন্তু না… এরপর বের হয়ে আসে আসল গোপন তথ্য, জিন সিউক নিজেকে ২১ বছরের মনে করলেও সে আসলে ৪১ বছরের এক ব্যাক্তি। যাদের সাথে সে থাকে তারাও তার আসল ভাই, বাবা-মা নয়। এত বছর ধরে তারা তাকে বন্দী করে রেখেছে ২০ বছর আগে ঘটে যাওয়া একটা খুনের ঘটনার তথ্য উদ্ধারের জন্য।
আমি এরকম থ্রিলার এর আগে দেখিনি। ছবির চিত্রায়ন আর গল্প বলার ভঙ্গী আমার যথেষ্ট ইউনিক মনে হয়েছে। কিন্তু গল্পের ফাঁকফোকরে কিছুটা ঝুলে গেছে মাঝে এসে। কাউকে হিপনোটাইজ করে সেখান থেকে তথ্য বের করে নিয়ে আসার জন্য এত দীর্ঘ সময় বোধহয় কাজে আসে না। গল্পের এই অংশটুকু আমার পুরাই অযথা মনে হয়েছে।
ছবির শেষটা ভালো লাগেনি। শেষে এরকম মর্মান্তিক আর অযৌক্তিক মৃত্যু কেন সেটাও প্রশ্নবোধক। তবে ছবির শেষে খুনি নিজের উপর সব দোষ নিয়ে ভিক্টিমকে মানসিক শান্তি দেবার চেষ্টা লক্ষনীয়। তার অনুশোচনা যথেষ্ট বাস্তব মনে হয়েছে। এরপরও শেষের দুই মৃত্যুর একটাও মেনে নেয়া কষ্টের।
ছবির শেষে আবার একটা রিপ্লে এর মত দেখানো হয় যেখানে জিন-সিউক একটা ছোট বাচ্চার সাথে লেকের পাড়ে কথা বলে। এটা যেন অনেকটা ভাগ্যের খেলা। তাদের দুজনের আবার যখন দেখা হয় তখন এই পরিবেশ বদলে যায়। একজন খুনি আর ভিক্টিম! নিয়তির কি নিষ্ঠুর খেলা।
মোটামুটি ভালো লাগবে থ্রিলার ভক্ত হলে। তবে এটাকে আমি মাস্টারপিস বলতে নারাজ।