কিভাবে ই পাসপোর্ট করবেন? এর পূর্ণাঙ্গ তথ্য অনলাইনে স্টাডি করে আপনাদের জন্য সহজ এবং সুন্দরভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, আশাকরি সকলেই উপকৃত হবেন।
আবেদন
★অনলাইন আবেদনঃ ই-পাসপোর্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। কোন তথ্য বা বানান যেন ভুল না হয় সেদিকে অবশ্যই নজর রাখবেন। ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইট লিংক- https://epassport.gov.bd/
°অনলাইনেই জমা দেওয়ার তারিখ পেয়ে যাবেন (এনরোলমেন্ট)।
★অফলাইন আবেদনঃ আপনি চাইলে অফলাইনেও আবেদন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে PDF ফর্ম ডাউনলোড করে PDF Editor এর মাধ্যমে কম্পিউটারে সরাসরি পূরণ করতে হবে। হাতে লেখা ফর্ম গ্রহণযোগ্য নয়। PDF ফর্ম ডাউনলোড লিংক- https://epassport.gov.bd/instructions/application-form (অফলাইন সেবা এখনো চালু হয়নি; তবে খুব শীঘ্রই চালু হবে)
পরামর্শঃ অনলাইনেই সব কিছু করবেন। এতে আপনার ঝামেলা কম হবে এবং অনেক সময় বেঁচে যাবে।
ফি পরিশোধ
★অনলাইন পরিশোধঃ সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে অনলাইনে ফি পরিশোধ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে MasterCard, Visa, Q-Cash, bkash, DBBL Nexus গ্রহণযোগ্য।
°আবেদন সম্পূর্ণ করার পর অনলাইন পেমেন্ট অপশনটা শুধুমাত্র একবার আসবে। সুতরাং সকল প্রস্তুতি আগেই নিয়ে রাখতে হবে।
°অনলাইনে পেমেন্ট করার জন্য আপনার ব্রাউজারের পপ-আপ ব্লকার অক্ষম করতে হবে ।
অফলাইন পরিশোধঃ
যার অনলাইনে পরিশোধ করতে পারবেন না তাদের জন্য অফলাইনে তথা ব্যাংকের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করার ব্যবস্থা রয়েছে। সোনালী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া এবং ঢাকা ব্যাংকে পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারবেন।
°ব্যাংক ফি পরিশোধ করার সময় পাসপোর্ট আবেদনপত্র সাথে রাখতে হবে।
°পেমেন্ট স্লিপ অবশ্যই বুঝে নিয়ে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।
★মেয়াদ ও পৃষ্ঠা অনুযায়ী পাসপোর্ট ফি (ভ্যাট সহ):
*৪৮ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট-
➡২১ দিনের মধ্যে নিয়মিত বিতরণ: ৪০২৫ টাকা।
➡১০ দিনের মধ্যে জরুরী বিতরণ: ৬৩২৫ টাকা।
➡২ দিনের মধ্যে অতীব জরুরী বিতরণ: ৮৬২৫ টাকা।
*৪৮ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট-
➡২১ দিনের মধ্যে নিয়মিত বিতরণ: ৫৭৫০ টাকা।
➡১০ দিনের মধ্যে জরুরী বিতরণ: ৮০৫০ টাকা।
➡২ দিনের মধ্যে অতীব জরুরী বিতরণ: ১০,৩৫০ টাকা।
*৬৪ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
➡২১ দিনের মধ্যে নিয়মিত বিতরণ: ৬৩২৫ টাকা।
➡১০ দিনের মধ্যে জরুরী বিতরণ: ৮৬২৫ টাকা।
➡২ দিনের মধ্যে অতীব জরুরী বিতরণ: ১২০৭৫ টাকা।
*৬৪ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
➡২১ দিনের মধ্যে নিয়মিত বিতরণ: ৮০৫০ টাকা।
➡১০ দিনের মধ্যে জরুরী বিতরণ: ১০৩৫০ টাকা।
➡২ দিনের মধ্যে অতীব জরুরী বিতরণ: ১৩৮০০ টাকা।
পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রমঃ বর্তমান ঠিকানা বা দেশ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিস বা দূতাবাসে আবেদন করতে হবে। আগারগাঁও অফিসে ৪০১ নাম্বার রুমে অনলাইন আবেদন পত্র জমা দিবেন।
★ঢাকা বিভাগীয় ও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের অধীনস্থ থানা-
আগারগাঁও অফিসঃ শেরে-বাংলা নগর, মিরপুর, পল্লবী, শাহ আলী, কাফরুল, ভাষানটেক, ঢাকা ক্যান্টমেন্ট, বনানী, গুলশান, শাহজাহানপুর, রামপুরা, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, শাহবাগ, রমনা, পল্টন, মতিঝিল, ঢাকা রেলওয়ে, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গী চর, লালবাগ, চকবাজার, বংশাল, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা, দারুসসালাম, সাভার, ধামরাই।
উত্তরা পাসপোর্ট অফিসঃ উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণখান, তুরাগ, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, ভাটারা, বাড্ডা, আশুলিয়া।
যাত্রাবাড়ী পাসপোর্ট অফিসঃ যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, সবুজবাগ, খিলগাঁও, মুগদা, শ্যামপুর, সূত্রাপুর, কদমতলী, কোতোয়ালী, গেন্ডারিয়া, ওয়ারী, নওয়াবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা, দোহার।
★আবেদনের জন্য যা যা সাথে নিতে হবেঃ
০১। আবেদন ফর্ম।
০২। জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড কপি।
০৩। এপয়েন্টমেন্ট ডেট ইমেইল কপি।
০৪। ফি পরিশোধের স্লিপ।
০৫। জব আইডি বা স্টুডেন্ট আইডি কপি।
০৬। বর্তমান ঠিকানার বিদ্যুৎ বিলের কপি।
০৭। পুরাতন পাসপোর্ট কপি (যদি থাকে)।
০৮। স্মার্ট ফোন (মেইল দেখানোর জন্য)।
০৯। ১৮ বছরের নীচে আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ ও পিতা মাতার এন আই ডি কপি।
১০। ০৬ বছরের নীচে আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট সাইজ ও 3R সাইজ ছবি।
১১। ১৫ বছরের নীচে আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে পিতা-মাতা অথবা বৈধ অভিভাবকের পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
এ ছাড়া যা যা প্রয়োজন মনে করবেন সাথে নিয়ে যাবেন। সব কিছুর মূল কপি অবশ্যই সাথে রাখবেন। দেখাতে হতে পারে।
★পাসপোর্ট অফিসের কাজঃ
১। কাগজপত্র ও ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই।
২। পাসপোর্ট ফি পরিশোধ যাচাই।
৩। আবেদনকারীর ফটো তোলা।
৪। আঙ্গুলের ছাপ ও আইরিশের ছবি গ্রহণ।
ছবি তোলার ক্ষেত্রে যা গ্রহণযোগ্য না-সাদা এবং হালকা রঙের সকল পোশাক, টুপি, ক্যাপ, হিজাব (মুখমণ্ডল পূর্ণাঙ্গ পদর্শন করতে হবে), কপালে টিপ সহ ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়।
সব কাজ শেষ হলে ডেলিভারি স্লিপ বুঝে নিন এবং সতর্কতার সাথে তা সংরক্ষণ করুন। পাসপোর্ট সংগ্রহের সময় ডেলিভারি স্লিপ প্রর্দশন বাধ্যতামূলক।
ঠিকানা ভেরিফিকেশনঃ
আবেদনের ৭/৮ দিনের মধ্যে থানার মাধ্যমে আপনার ঠিকানা ভেরিফাই করা হবে। যাদের বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা আলাদা তাদের আলাদা আলাদা ভেরিফিকেশন হবে।
★ভেরিফিকেশনের সময় যা যা প্রয়োজন হবে-
১। জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন সনদ (কপি+মুল)
২। জব আইডি বা স্টুডেন্ট আইডি (কপি+মুল)
৩। বিদ্যুৎ বিল (কপি+মূল)
৪। এসএসসি/এইচএসসি সার্টিফিকেটের (কপি+মূল)
৫। পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের কপি।
৬। নাগরিক সনদপত্র
৭। বাড়ী/জমির দলিলের কপি (যদি থাকে)।
পুলিশ যে সকল কাগজপত্র দেখতে চায় সেগুলো দেখাতে হবে।
ই-পাসপোর্ট সংগ্রহঃ
আপনার পাসপোর্ট ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলে মোবাইলে “এস এম এস” পাবেন। নির্দিষ্ট তারিখ অনুযায়ী পাসপোর্ট অফিসে স্ব শরীরে যেতে হবে (ফিঙ্গার ফ্রিন্ট পরীক্ষা করা হবে)। সাথে যা যা নিতে হবে-
১। ডেলিভারী স্লিপ।
২। সর্বশেষ পুরানো পাসপোর্ট (যদি থাকে)।
★বিশেষ ক্ষেত্রে উপযুক্ত বাহকের কাছে পাসপোর্ট প্রদান করা হতে পারে। তার জন্য যেসকল প্রমাণাদি উপস্থাপন করতে হবে-
১। ১১ বছরের কম বয়সী সন্তানের পিতামাতা অথবা বৈধ অভিভাবক নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র, আবেদনকৃত পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ ও পূর্বের পাসপোর্ট (যদি থাকে) প্রদর্শন করে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন ।
২।অসুস্থ ব্যক্তির ক্ষেত্রে ক্ষমতা হস্তান্তর পত্র, আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, পুরাতন পাসপোর্ট (যদি থাকে) এবং ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র, পুরাতন পাসপোর্ট (যদি থাকে) প্রদর্শন করে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।
ডেলিভারি স্লিপ হারিয়ে গেলে নিকটস্থ থানায় জিডি করে তার কপি দিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে।
পরামর্শঃ ডেলিভারি স্লিপ পাওয়ার সাথে সাথে মোবাইলে ছবি তুলে রাখুন।
তথ্য পরিবর্তনঃ
স্থায়ী ঠিকানা, বৈবাহিক অবস্থা, পেশা বা অন্যান্য তথ্যাদি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পরিবর্তিত তথ্য সংশ্লিষ্ট যাবতীয় সকল প্রমাণাদি/কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। পাসপোর্ট সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য কল করুন এই নাম্বারে- 01733393399 (ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর)
এবার আসুন আরো বিস্তারিত ভাবে জেনে নেয়া যাক প্রতিটি ধাপ। অনেকেই আছেন বুঝতে পারেন না কিভাবে অনলাইনে ফর্ম পূরন করবেন, তাদের জন্য নিচের লেখাটি ফেইসবুক থেকে নেয়া হয়েছে। কৃতজ্ঞতাঃ Md Sajol Hossain
♦ পাসপোর্টঃ যেভাবে করবেন,সতর্কতা ও জ্ঞাতব্য ♦
প্রথমেই বলে রাখি যারা নতুন পাসপোর্ট করবেন বা পুরাতন পাসপোর্ট রি ইস্যু করবেন এই পোস্ট শুধুমাত্র তাদের জন্য। পোস্ট অবশ্যই অনেক বড় হবে। বিস্তারিত, তথ্যবহুল ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে পূর্নাঙ্গ আলোচনা করার চেষ্টা করব।তাই যাদের ধৈর্য্য বা হাতে সময় নেই তাদের এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
মূল আলোচনাঃ ☞☞☞
১.
বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সরকার তিন ধরনের বাংলাদেশ পাসপোর্ট ইস্যু করে থাকেঃ
আন্তর্জাতিক সাধারণ পাসপোর্ট (সবুজ মলাট)
সরকারী পাসপোর্ট (নীল মলাট)
কূটনৈতিক পাসপোর্ট (লাল মলাট)
২.
আমাদের দেশে বর্তমানে উপরে উল্লিখিত তিন ধরনের পাসপোর্ট আবার দুই রকম ভাবে তৈরি হয়।
ম্যাশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) এবং
E Passport বা ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট।
আপনারা জানেন ম্যাশিন রিডেবল পাসপোর্ট বা MRP (পাসপোর্ট) বর্তমানে জালিয়াতি করা হচ্ছে। তাছাড়া MRP (পাসপোর্ট) করা যায় ৫ বছরের জন্য।যা বারবার নবায়ন করতে হয়,যা একটি সমস্যা।
এছাড়া MRP এর আরো বেশ কিছু সমস্যা থাকার কারনে বাংলাদেশ সরকার দেশে ই-পাসপোর্ট চালু করে।ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু করার দিক থেকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ ১১৯ তম হলেও দক্ষিন এশিয়াতে ১ম দেশ।
৩.
এবার আসি আপনি কোন পাসপোর্ট বানাবেন সে প্রসঙ্গে।
MRP তে বর্তমান সময়ে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে।যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নিরাপত্তা ঝুকি।যা কেও ই নিতে চায় না।অন্যদিকে ই পাসপোর্ট এখন পর্যন্ত সম্পুর্ন ঝুকিমুক্ত ও আপডেটেড।MRP পাসপোর্টের মেয়াদ হয় ৫ বছর কিন্তু ই পাসপোর্ট এ চাইলে আপনি ৫ বা ১০ বছর যেটা খুশি চয়েজ করতে পারবেন যেটা MRP তে সম্ভব নয়। এরপর আসি, বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে আপনি ই পাসপোর্ট দিয়ে সহজেই ই গেট ব্যবহার করে কোন দেশে দ্রুত ও ঝামেলাবিহীন এন্ট্রি নিতে পারবেন।
আমি ধরেই নিলাম আপনি ই পাসপোর্ট করবেন।সেক্ষেত্রে কি কি করণীয় বা প্রসেস কি, অনেকে না জানার ফলে ভুক্তভোগী হতে হয়।
চলুন শুরু করিঃ➤➤➤
স্টেপ ১ঃ
আপনি প্রথমে epassport.gov. bd এই সাইটে প্রবেশ করুন।স্ক্রিনে হাতের বামে তিনটা হাইপেনের মত স্থানে টাচ করুন।নিচের ছবির মত আসবে।
APPLY ONLINE এ ক্লিক করুন।এরপর প্রথম বক্স থেকে আপনার জেলা ও দ্বিতীয় বক্সে আপনার কাছাকাছি থানা সিলেক্ট করুন।
নিচে CONTINUE তে ক্লিক করুন।
(আগে অবশ্যই জেনে নেবেন আপনার RPO বা রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিসে ই পাসপোর্ট চালু হয়েছে কি না।)
স্টেপ ২ঃ
এই ধাপে আপনাকে আপনার মুবাইল বা ল্যাপটপের এক্টিভ ইমেইল আইডি বসান।যে ইমেইলে আপনি লগিন অবস্থায় আছেন সেটি বসালেই ভালো হয়।ইমেইল বসানো হলে,নিচে I’m not a robot এ ক্লিক করুন আর ক্যাপচা মিলান।নিচে ছবি দেওয়া আছে।সাধারণত আপনাকে বাস,গাড়ি,সাইকেল,ট্রাফিক লাইট,চিমনি ইত্যাদি এসবের ছবি মার্ক করতে বলবে।সেগুলা মার্ক করে সাবমিট করুন।সর্বোচ্চ দুই তিনবার চাইতে পারে।একবারেই হয়ে যায় সাধারণত।এখন আবার Continue তে ক্লিক করুন।
স্টেপ ৩ঃ
আপনার পাসপোর্ট আবেদনের অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ স্টেজ এটি।এই ধাপে খুব খেয়াল করে সময় নিয়ে প্রতিটা বক্সের তথ্য পূরণ করুন। প্রথমেই,আপনার এক্টিভ ইমেইলটি বসিয়ে তার নিচে ইচ্ছেমত ৮-২০ অক্ষরে বা সংখ্যা মিলিয়ে একটি পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। ইমেইল এর নিচে দুইটি বক্সে একই পাসওয়ার্ড দুই বক্সে বসান।
এরপর আপনার Personal Information দিবেন।কোন ভুল করা চলবে না। এখানে প্রথমে আপনি আপনার আইডি কার্ড অনুসারে ঠিক যেভাবে নাম আছে সেভাবেই দিবেন। নিচে ছবি দেওয়া আছে। Given Name ও Surname এ ঝামেলা হয়। এই ধরুন আমার নাম Md. Sajol Hossain.
সেক্ষেত্রে আমার Given Name হবে Md. Sajol এবং Sur Name হবে Hossain
এরপর আপনার সক্রিয় মোবাইল নাম্বার বসিয়ে আগের মত ক্যাপচা মিলিয়ে Continue করুন।
স্টেপ ৪ঃ
প্রথম অংশের কাজ প্রায় শেষ। এখন আপনাকে নিচের ছবির মত একটা পেজ আসবে এবং সেখানে ইংরেজিতে বলা থাকবে যে আপনার ইমেইলে একটি Activation Link পাঠানো হয়েছে।
আপনি মাঝখানে টাচ করে বেরিয়ে যাবেন। আবার ব্যাক বাটনে যেন টাচ না করেন। এবার ইমেইলে গিয়ে দেখেন পাসপোর্ট অফিস থেকে কোন ইমেইল আসছে কি না। না আসলে আবার সেই পেজে এসে Resend এ ক্লিক করুন। এক মিনিটেই এক্টিভেশন লিংক এসে যাবে। তারপর ইমেইল ওপেন করে লিংকে ক্লিক করুন নতুন যে পেজ আসবে সেখানে নিচে Sign in লেখায় ক্লিক করুন এবং আগের মতই ক্যাপচা মিলিয়ে সাবমিট করুন।
নতুন একটি পেজ আসবে। Apply for a new e passport এ ক্লিক করুন।
★★★★☆ ♠♠♠♠♠
এখন আসবে আবেদনের দ্বিতীয় অংশ। যেখানে আট টি ধাপে আপনি আপনার বিস্তারিত তথ্য ইনক্লুড করবেন। খুব সহজেই এই ধাপের কাজ করা গেলেও বারবার দেখে নেবেন যেন ভুল তথ্য এন্ট্রি না হয়।
✘✘✘✘✘✘✘✘
প্রথম ধাপঃ
PERSONAL INFORMATION (ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান)
প্রথমে i apply for myself লেখা পাশের বক্সে ক্লিক করে টিক চিহ্ন দিন।এরপর বক্স থেকে আপনার লিঙ্গ,পেশা,ধর্ম,জন্মভুমি,জেলা,জন্ম তারিখ দেওয়ার পর নিচে বাংলাদেশে জন্ম নিলে By Birth সিলেক্ট করুন।এরপর আইডি নাম্বার বসিয়ে Save and Continue তে ক্লিক করে পরের ধাপে যান।
দ্বিতীয় ধাপঃ
PREVIOUS PASSPORT (পূর্ববর্তী কোন পাসপোর্ট আছে কি নেই)
যেহেতু আপনি নতুন আবেদনকারী তাই আপনার আগে কোন পাসপোর্ট ছিলনা। তাই আপনি তিন নাম্বার অপশনে ক্লিক করবেন যেখানে No,I Don’t have any previous passport before লেখা আছে। Save and Continue দিয়ে পরের পেজে যান। আর আগের MRP থাকলে প্রথম অপশন সিলেক্ট করে পূর্বের পাসপোর্ট নাম্বার ও অন্যান্য তথ্য দিয়ে Save and Continue তে ক্লিক করুন।
তৃতীয় ধাপঃ
ADDRESS (বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা প্রদান)
এই ধাপে আপনার ঠিকানা দিতে হবে। প্রেজেন্ট এড্রেসের প্রথমে নিজ জেলার নাম বক্সে থেকে সিলেক্ট করুন। এরপরের বক্সে নিজের গ্রামের নাম লিখুন।তারপর পোস্ট অফিস ও পোস্টাল কোড বসান। এরপর আপনার পুলিশ স্টেশন সিলেক্ট করুন বক্স থেকে।
প্রেজেন্ট এড্রেস মানে বর্তমান ঠিকানা আর পার্মানেন্ট এড্রেস বা স্থায়ী ঠিকানা একই হলে নিচের ছবির মত বক্সে ক্লিক করে টিক চিহ্ন দিন। এরপর আগের মতই Save and continue দিয়ে পরের ধাপে চলে যান।
চতুর্থ ধাপঃ
Parental Information (পিতা-মাতা সম্পর্কিত তথ্য )
এই ধাপে আপনি আপনার আইডি কার্ড অনুযায়ী আবারও বলছি আপনার আইডি কার্ডে পিতা মাতার নাম যেভাবে আছে সেভাবেই লিখবেন।প্রথমে বাবার নাম পরে বক্সে থেকে বাবার পেশা,জাতীয়তা,বাবার আইডি থাকলে সেই আইডির নাম্বার দিতে পারেন। আইডি নাম্বার না দিলেও সমস্যা নাই।
একইভাবে মায়ের নাম,পেশা,জাতীয়তা ও আইডি নাম্বার বসাবেন। GUARDIAN INFORMATION এ Not Applicable এর পাশে বক্সে ক্লিক করে টিক চিহ্ন দিয়ে আগের মতই Save and Continue তে ক্লিক করেন।
পঞ্চম ধাপঃ
SPOUSE INFORMATION (বিবাহ সম্পর্কিত তথ্য)
এখন, বিবাহিত হলে বক্সে থেকে Married,অবিবাহিত হলে Single বিচ্ছেদ হলে Divorced সিলেক্ট করে Save and Continue তে ক্লিক করে পরের ধাপে চলে যান।
ষষ্ঠ ধাপঃ
EMERGENCY CONTACT (জরুরি প্রয়োজনে আপনার বাসায় যার সাথে যোগাযোগ করা হবে সে ব্যক্তির তথ্য)
প্রথমে বক্স থেকে মাতা বা পিতা কেও একজনকে এমারজেন্সি কন্টাক্ট হিসেবে সিলেক্ট করুন। এরপর বক্স থেকে আপনার এমারজেন্সি কন্টাক্টের ব্যাক্তির দেশ,জেলা,গ্রাম,পোস্ট অফিস,পুলিশ স্টেশন ও তার মোবাইল নাম্বার বসিয়ে Save and Continue তে ক্লিক করুন।
সপ্তম ধাপঃ
PASSPORT OPTIONS (কেমন পাসপোর্ট নিতে চান সে সম্পর্কিত)
এই ধাপের প্রথমে আপনি সিলেক্ট করবেন পাসপোর্ট কত পাতারটা করবেন। ই পাসপোর্ট ৪৮ পাতার হয় আবার ৬৪ পাতারও হয়। আপনি পর্যটক হলে বা অনেক দেশ ভ্রমন করার ইচ্ছা থাকলে ৬৪ পাতার নিবেন। নইলে ৪৮ ই যথেষ্ট।
এরপর আপনি ঠিক করবেন,পাসপোর্ট কত বছরের জন্য বানাবেন।৫ বছরের নাকি ১০ বছরের জন্য।১০ বছর সিলেক্ট করাই ভালো। দীর্ঘদিন হ্যাসেল ফ্রি থাকবেন।মনে রাখবেন যত বেশি পাতা ও যত বেশি মেয়াদ তত খরচ বেশি হবে। পাসপোর্ট এর পাতা ও মেয়াদ সিলেক্ট করে Save and Continue করবেন।
অষ্টম ধাপঃ
DELIVERY OPTIONS (আপনি কতদিনের মধ্যে পাসপোর্ট নিতে চান সে তথ্য)
এখন আপনি আবেদনের লাস্ট স্টেজে আছেন।পাসপোর্ট আপনি ২ দিনে মানে Super Express Delivery, ৭ দিনে মানে Express Delivery আর নাকি ২১ দিনের মধ্যে Ordinary Delivery তে নিবেন তা সিলেক্ট করে Save and Continue তে ক্লিক করুন।
এখন আপনার সামনে আপনার সমস্ত তথ্য দেখতে পাবেন।
আইডি কার্ডের সাথে সকল তথ্য ভালভাবে মিলিয়ে নিন। যেখানে ভুল দেখবেন সে তথ্যের ডান কোনায় Edit এ ক্লিক করে সংশোধন করুন। এরপর কিন্তু Confirm করার পর আর চেঞ্জ করতে পারবেন না। যদি ভুল না থাকে তবে তথ্য যাচাই শেষে Confirm and Proceed to Payment এ ক্লিক করুন।
এখন পেমেন্ট যদি অনলাইনে মানে বিকাশ,নেক্সাস পে,ই পেমেন্ট বা ডেভিড কার্ডে করতে চান তাহলে Online Payment (অনলাইন পেমেন্টে) এ ক্লিক করুন। (অনলাইনে পেমেন্ট অনেক সময় বন্ধ থাকে)
আর যদি অফলাইনে মানে আশেপাশের ব্যাংকে গিয়ে দিতে চান তাহলে অফলাইন পেমেন্ট সিলেক্ট করুন।
এরপর Continue দিয়ে আপনার সুবিধামত তারিখের শিডিউল দিন।
প্রথমে মাস ও পরে তারিখ সিলেক্ট করে যে কয়টা বাজে যেতে চান সে টাইম সিলেক্ট করুন।
আপনার আবেদনের সমস্ত কাজ শেষ।
এখন আপনি ওই পেজে থাকাকালীন সময়ে এপ্লিকেশন সামারি ও শিডিউল সামারি ডাওনলোড করে নিন। এরপর সেটা প্রিন্ট করুন।
এপ্লিকেশন সামারি তিন পাতায় ও শিডিউল সামারি এক পাতার হবে।
এরপর আপনি নিচের যেকোন ব্যাংকে গিয়ে পাসপোর্ট এর ফি জমা দিয়ে সেখান থেকে রশিদ নিয়ে আসবেন।(যদি আপনি অফলাইন পেমেন্ট সিলেক্ট করে থাকেন)
যেসব ব্যাংকে পাসপোর্ট ফি জমা দিবেনঃ
সোনালী ব্যাংক,
ব্যাংক এশিয়া
ট্রাস্ট ব্যাংক
প্রিমিয়ার ব্যাংক
ঢাকা ব্যাংক
ওয়ান ব্যাংক
রশিদ নেওয়া হয়ে গেলে নির্ধারিত ডেটে আবেদনের চার পাতা কাগজ, ব্যাংক রশিদ, অরিজিনাল আইডি ও চেয়ারম্যান এর নাগরিকতা সনদ এই কাগজ নেওয়া ফরজ।
এরপর অফিস ভেদে, স্টুডেন্ট আইডি, বার্থ সার্টিফিকেট, পিতা মাতার আইডি, বিবাহিত হলে কাবিন নামা ইত্যাদি অতিরিক্ত কাগজ চাইতে পারে। থাকলে সাথে এগুলোও নিয়ে যাবেন।
আবেদনে সমস্যা না থাকলে কিছুক্ষন পর আপনার ছবি তুলবে, এরপর দশ আঙুলের হাতের ছাপ, চোখের আইরিশের ছাপ ও স্বাক্ষর নিয়ে আপনাকে সমস্ত তথ্য দেখিয়ে ভুল আছে কি না তা এনরোলমেন্ট অফিসার জিজ্ঞেস করবে। চেক করে ভুল না থাকলে (সাধারণত এ ধাপে ভুল হয়না বললেই চলে) সাবমিট দিতে বলবেন। সাবমিট হয়ে গেলে তারা আপনাকে একটা ডেলিভারি স্লিপ দিবে যেটা দিয়ে আপনি আপনার পাসপোর্ট নিতে আসবেন।
এরপর সবকিছু ঠিক থাকলে এক সপ্তাহের মধ্যে আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন আসবে।
পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়ে গেলে ১০-১৫ দিনের বেশি লাগেনা অরডিনারি ডেলিভারির ক্ষেত্রে। পাসপোর্ট হয়ে গেলে মোবাইলে ম্যাসেজ আসবে।তার একদিন পরে গেলেই পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।
যেসব সতর্কতা অবলম্বন করবেনঃ
১.সমস্ত ডকুমেন্ট স্ট্যাপলার মেশিনে পিন মেরে নিয়ে যাবেন কিন্তু টাকা জমা দেওয়ার রশিদ আঠা দিয়ে সমস্ত কাগজের উপরে ডানপাশে সংযুক্ত করবেন।
২. প্রথমে আপনার তিন পৃষ্ঠার আবেদন পত্র,এরপর শিডিউল সামারি,তারপর আইডি কার্ডের রঙিন কপি, এরপর চেয়ারম্যান এর সার্টিফিকেট একসাথে পিন মেরে আবেদন পত্রের উপরে পেমেন্ট রশিদ ডানপাশে আঠা দিয়ে লাগিয়ে রিসিপশনের অফিসারের নিকট জমা দিবেন
৩.অবশ্যই মাস্ক সাথে নেবেন।হাত ঘামালে আঙুলের ছাপ উঠতে সমস্যা হয় তাই টিস্যু বা রুমাল সাথে নেবেন।ছবি তুলার আগে মুখ ধুয়ে নিলে ভালো ছবি আসে।
৪.আবেদনে কোন ভুল থাকলে এনরোলমেন্ট অফিসার তা ঠিক করে দেবেন। তাই ঘাবড়ে গিয়ে দালাল খুজতে যাবেন না। যদি ভুল সংশোধন যোগ্য না হয় তাহলে আবেদন সাথে সাথে রিজেক্ট দিতে বলবেন। এরপর তথ্য সংশোধন করে আপনি চাইলে সেদিনই আবেদন করে পরের দিনই শিডিউল পেয়ে যেতে পারেন।
৫.ফরমাল ড্রেসে যাওয়ার চেষ্টা করুন।সাদা শার্ট বা গেঞ্জি অবশ্যই এড়িয়ে যাবেন।
৬.শিডিউলে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পৌছাবেন।অন্যথায় আপনি শিডিউল মিস করতে পারেন।
৭.আপনার স্বাক্ষর কোন কাগজে নিবে না।স্বাক্ষর দিতে হবে ইলেকট্রনিক ম্যাশিনে।অনেকটা স্যামসাং মুবাইলে স্ক্রিনে টাচ বা লেখার জন্য যে কলম দেয় তার মত।তাই হঠাৎ করে প্রথমে স্বাক্ষর ভালো হয়না।স্বাক্ষর সুন্দর না হলে আবার দিবেন।
৮.আপনার পাসপোর্ট সংক্রান্ত কোন সমস্যা হলে এনরোলমেন্ট অফিসারকে বিনয়ের সাথে মার্জিত ভাবে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করুন।তিনি গুরত্ব না দিলে ধৈর্য্য ধরুন।ভুলেও উচ্চবাচ্য করতে যাবেন না।
৯.সব রকম ডকুমেন্টস ও ইনফরমেশন অবশ্যই অরিজিনাল হতে হবে।আবেদনের কোথাও ফলস ডকুমেন্টস বা ফলস ইনফরমেশন দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।নইলে বিপদে পরবেন।
১০.আবেদনে আপনার পেশা নির্বাচন করার সময় সচেতন থাকুন।বক্স থেকে আপনার নির্ধারিত পেশা না থাকলে Others সিলেক্ট করুন।ভুল পেশা নির্বাচন না করাই উত্তম।আপনার আবেদন রিজেক্ট হতে পারে এর জন্য।
১১.এখন একটা পরামর্শ দেই,তা হচ্ছে আপনার আবেদন যে অফিসার সাবমিট করেছে তার মোবাইল নাম্বার পারলে অনুরোধ করে নিয়ে আসুন।অনেক মুশকিল আছান হয়ে যায় একটা কলে।নইলে অনেক সময় বারবার পাসপোর্ট অফিসে যেতে হয়।
১২.পাসপোর্ট সংক্রান্ত যে কোন জিজ্ঞাসার জন্য আপনার এনরোলমেন্ট অফিসারকে লাঞ্চ আউয়ারের পরে কল দিয়ে, আপনার ডেলিভারি স্লিপের একেবারে উপরে বাম পাশে একটা নাম্বার দেওয়া আছে যেটাকে এনরোলমেন্ট আইডি বলে সেটা বলবেন। তাহলে খুব সহজেই তিনি আপনার পাসপোর্ট কখন কোন স্টেজে আছে বলে দিতে পারবেন। আপনি কিন্তু আপনার ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে epassport.gov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আপনার পাসপোর্ট এর সর্বশেষ আপডেট দেখতে পারবেন। একই স্টেজে এক সপ্তাহ ধরে থাকলে এনরোলমেন্ট অফিসারকে কল দিবেন। নইলে তাদের বিরক্ত না করাই ভালো।
অবশেষে বলব, নিজের পাসপোর্ট নিজেই করুন, না বুঝলে সহযোগীতা নিন। তবুও দালাল চক্রের ফাদে পা দেবেন না।