মুভির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চমক ধরে রাখাটা যেকোন মুভির জন্য স্বার্থকতা। Bird Box (2018) তে কাহিনী শুরু হবার পর একবার পেছনের আরেকবার বর্তমানের ঘটনা অসাধারন সামঞ্জস্য রেখে দেখানো হয়েছে। হরর মুভির জন্য এটা একটা চমক। অনেকদিন হয়ে গেল মনে রাখার মত কোন সাইফাই হরর মুভি দেখি না।
আদতে এটাকে হরর মুভি বলবেন নাকি সায়েন্স-ফিকশন তা দর্শকের নিজ দায়িত্বে ছেড়ে দিলাম। ছবির কাহিনীতে যে সময়ের কথা বলা হয়েছে তখন মানব সভ্যতা ধবংসের দ্বারপ্রান্তে (post apocalyptic world)।
গল্প শুরু হয় এক মা তার বাচ্চাদের চোখে কাপড় বেঁধে নদীর মাঝখান দিয়ে একটা নৌকায় যাত্রা শুরু করা দিয়ে। মায়ের ভুমিকায় সান্ড্রা বুলককে দেখতে পারবেন। কাজেই অভিনয় প্রতিভা নিয়ে বিশেষ কোন লেকচার দেয়ার প্রয়োজন মনে করছি না।
চোখ বেঁধে যাত্রা করার কারন মুভির আধা ঘন্টার মধ্যেই দর্শকের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে। মূল কথা কথা তাঁকানো যাবে না, তাঁকালেই বিপদ, জীবন সংশয়। আত্বহত্যার প্রবনতা জেগে উঠবে আপনার মাঝে।
কিন্তু কিসের দিকে তাঁকানো যাবে না? কি দেখলে সমস্যা? এরকম অনেক প্রশ্নের জবাব মুভি শেষেও মিলবে না।
গল্পটা কি কিছুটা চেনা চেনা লাগছে? হতে পারে…। মানব সভ্যতা ধ্বংসের পথে এবং তখন অল্প কিছু মানুষের চারিত্রিক দৃঢ়তা এবং কার্যকলাপ নিয়ে এর আগেও মুভি হয়েছে। যেমনঃ The Mist, A Quiet Place ইত্যাদি। কিন্তু কোন ভাবেই আপনি বলতে পারবেন না Bird Box (2018) – মুভিতে এগুলোর কোন কাহিনী নকল করা হয়েছে। কিছু সামঞ্জস্য যদি খুঁজেও পান তবে তা আপনার বিচক্ষনতা :)।
Bird Box (2018) – মুভির সব থেকে ভালো দিক বোধহয় এর ডায়লগ ডেলিভারিতে। সচরাচর হরর মুভির ডায়লগ খুবই একপেশে আর নিরানন্দময় হয়ে থাকে। Bird Box (2018) – মুভির সংলাপ অসাধারন। Netflix এর মুভি হিসেবে অনেক বিবেচনায় এটি উতরে যাবে এবং সাইফাই হরর হিসেবে আমি Bird Box কে ১০০ তে ৬০ মার্ক দেব।
মুভির লোকেশন এবং ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বেশ ভালো মানের। কিন্তু হরর মুভির যে প্রেডিকশন করে থাকি সচরাচর তা থেকে ডিরেক্টর বের হতে পারেননি। আপনি খুব সহজেই বলে দিতে পারবেন কে মরবে আর কে বাঁচবে।
আর সব শেষে হলিউডি স্টাইলের হ্যাপি এন্ডিং তো রয়েছেই 🙂
Bird Box (2018) - মোটামুটি মানের সাইফাই হরর
-
অভিনয়
-
কাহিনী
-
চরিত্র
-
মিউজিক
-
সিনেমেটোগ্রাফী
Bird Box (2018)
এই ধরনের মুভি নতুন নয় আমরা এর আগেও দেখেছি। কিন্তু Bird Box (2018) – মুভি নিয়ে যে পরিমান হাইপ তৈরি করা হয়েছে তা একটু অবাক করার মতই। মুভিটাকে আমি মোটামুটি চলনসই বলব। কাহিনীতে অল্প কিছু নতুনত্ব আছে। ডায়লগ এবং লোকেশন অসাধারন পুরো মুভিতে, কিন্তু মিউজিকে খুব বেশি জাদু নেই।
হরর মুভি সহজে দেখি না, একটু সাইফাই এর গন্ধ পেয়ে দেখতে বসলাম, আরেকটা কারন Sandra Bullock । মুভির কাহিনী আর চরিত্রের আসা যাওয়া সহজেই অনুমান করা যায়, এখানেও কোন চমক নেই।
তারপর, অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলে না মুভির শেষেও। এই ভয়াবহ জানোয়ারগুলো কোথা থেকে আসল আর কেনইবা মানব প্রজাতির উপর ক্ষ্যাঁপা?
হাতে সময় থাকলে গোঁজামিলের এই মুভিটা দেখতে পারেন।