প্রিয়তমা (২০২৩) বাংলা মুভি রিভিউ
Movie title: প্রিয়তমা
Movie description: সুমন (শাকিব খান) তার ভাইয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে কক্সবাজার যায়, উদ্দেশ্য ভাইয়ের ব্যাবসায়িক পার্টনার এর কাছ থেকে টাকা আদায় করা। সেখানে গিয়ে সে এলাকার প্রাক্তন চেয়ারম্যানের মেয়ের (ইধিকা) প্রেমে পড়ে যায়। সেই মেয়ে তাকে ছেড়ে চলে গেলে সে প্রায় পাগল হয়ে যায়।
Country: বাংলাদেশ
Duration: ২ ঘন্টা ১৮ মিনিট
Author: হিমেল আশরাফ
Director(s): হিমেল আশরাফ
Actor(s): শাকিব খান (সুমন), ইধিকা পল (, শহীদুজ্জামান সেলিম (বদ্দা), লুতফর রহমান জর্জ (চেয়ারম্যান), কাজী হায়াত
Genre: রোমান্স
-
গল্প
-
অভিনয়
-
সিনেমেটোগ্রাফী
-
সংগীত
অনেক বেশ শোরগোল তোলা তথৈবচ বাংলা ছবি
ছবির হাইপ যত বেশি হয়েছে, তার থেকে বেশি যদি গল্পে মনোযোগ দেয়া যেত তবে হয়ত ভালো কিছু হতে পারত।
নতুন প্রজন্মের কেউ বাংলা ছবি দেখেনা বা ভবিষ্যতেও দেখবেনা এ কথাটা আসলে বলা ভূল হবে। তারা দেখে ভালো গল্প আর কাস্টিং আছে কিনা। একটা ছবি নিয়ে আপনি যত বেশিই হাইপ তোলেন না কেন, ঐ প্রথম সপ্তাহ পর্যন্তই। এরপর লোকমুখে ছড়িয়ে পরে ছবির অবান্তর আর আজগুবি প্লট, বাজে অভিনয় – মাস শেষে ছবি ফ্লপ।
বাংলা ছবির ক্যামেরা আগের থেকে ভালো হয়েছে। কিন্তু ইন্টারনেটের এই যুগে যে সকল ছবি দেখে আমরা অভ্যস্ত তার তুলনায় এগুলো কিছুই না। প্রিয়তমা অনেক হাইপ তোলা ছবি, শাকিব খানও ওভাররেটেড একজন অভিনেতা। অনেক আশা নিয়ে দেখতে বসে সেই হতাশাই আবার ঘিরে ধরল। কিছুতেই মন বসাতে পারছিলাম না। শুধু ইধিকা পলের নতুন মুখের জন্যই মনে হয় কিছুটা সময় স্ক্রিনে মন দিয়েছিলাম।
ইধিকাকে গ্লামারাস ঠিক বলব না, তবে অতি অভিনয় না করলে তার বাচনভঙ্গি আর চলাফেরায় বেশ স্বাচ্ছন্দ্য আছে। অনেকটা টলিউডের নায়িকাদের মত। এই অতি অভিনয় সম্ভবত তার ডিরেক্টর আর বড় ক্যামেরায় নতুন বলে চলে এসেছে।
যাত্রাপালার মত চিল্লাচিল্লি করে ডায়লগ দেয়া নাই, সেটা একদিক থেকে ভাল। কিন্তু ছবির গল্প একদম পানসে। কোন টুইস্ট নাই, খুব সহজেই অনুমান করা যায় কি হতে যাচ্ছে। সেই একইরকম প্রেম আর জোর করে বিয়ে দেয়ার গ্রাম্য চেষ্টা।
আমি শাকিব ভক্ত নই, তবে অবাক করা বিষয় এই ছবিতে শাকিব খান তার মুখের আর চোখের যে এক্সপ্রেশন দেখিয়েছেন সেটা বেশ প্রশংসার দাবি রাখে। ছবির প্রথম থেকেই তিনি সালমান খান ভাব নিয়েছেন, সেটা মাফ করে দিলাম। নিজেকে তিনি কিভাবে দেখাবেন সেটা অনেকটা নির্ভর করে পরিচালকের উপর। তবে ঘটনার পরম্পরা মিলাতে গেলে কেমন যেন সব খাপছড়া মনে হয়েছে।
তার ভাইয়ের মৃত্যুর পরে, বাবা কাজী হায়াৎ এসে ধপাস করে বুক ধরে পড়ে যান। এরপর তার অপারেশন করতে হবে, কিন্তু টাকা নেই…… ভাই আর কত? এবার এইসব গল্প লেখা বন্ধ করেন। কিসের অপারেশন সেটাও ঠিকমত বোঝা যাচ্ছিল না।
সেলিম খলনায়ক চরিত্রে উতরে যেতে পারতেন যদি ভাঁড়ামো না করতেন।
কাজী হায়াত এর অভিনয় খুবি দায়সারা গোছের।
দৃশ্যায়ন চমৎকার, লোকেশন ভালো, বালামের কন্ঠের গানের সাথে হালাকা কোমর দোলানোও চলে। কিন্তু কক্সবাজার থেকে বাসের ছাদে কেন শাকিব খান ফেরত আসছিলেন সেটা বোধগম্য হয়নি।
মারামারির দৃশ্য একদম বাজে। পরিচালক মনে হয় জানেন না, কক্সবাজার গেলেই পানিতে শুটিং না করলেও চলে। পানি আর পাহাড় এই দুইটা আকাশের কারনে ক্যামেরায় খুবই ফাঁকা ফাঁকা লাগে। হুদাই আশির দশকে ফেরত যাবার কারন ছিল না।
ইধিকার তারকা খ্যাতি পাওয়া এই ছবির একমাত্র প্রাপ্তি হতে পারে। শাকিব তার সেরাটা দিতে পারেননি। এতদিনেও তিনে নিজের একটা ইমেজ আর স্টাইল বানাতে পারলেন না, আফসোস।
বস্তাপচা এলোমেলো গল্পে আর বাজে ডিরেকশন থেকে খুব বেশি আশা করাটাই ভূল। ব্যবসা করার জন্য ঠিক আছে এই ধরনের ছবি, আমাদের দেশের ৬০ ভাগেরও বেশি গন্ডমূর্খের বিনোদন এই না ছবি না টেলিফিল্মেও হয়ে যাবে।
ছবিতে অপারেশন সাকসেসফুল হলেও ছবি হিসেবে এটা একটা আবর্জনা বাদে আর কিছুই না।