The Tomorrow War (2021) - সাইফাই মুভি রিভিউ
-
কাহিনী
-
অভিনয়
-
মিউজিক
-
গ্রাফিক্স
এলিয়েন ওয়ার ফেয়ারের নতুন চমক
ড্যান ফরেস্টার নামের একজন প্রাক্তন সৈনিককে ভবিষ্যতে নিয়ে যাওয়া হয় এলিয়েনদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য। ভবিষ্যতের মানুষ এই যুদ্ধে প্রায় হেরে গেছে, মানব প্রজাতি বিলুপ্তির পরে। অতীতের থেকে মানুষ গিয়ে কি ভবিষ্যতের পৃথিবী বাঁচাতে পারবে?
মুক্তির সময়ঃ ২রা জুলাই, ২০২১
পরিচালকঃ ক্রিস ম্যাককে
কাহিনীঃ য্যাক ডিন
অভিনয়েঃ ক্রিস প্রাট, ইয়োনি স্টারহোস্কি, জে.কে. সিমনস
ড্যান ফরেস্টার (ক্রিস প্রাট) একজন শিক্ষক, এক্স মিলিটারি, পরিবার নিয়ে বেশ সুখে আছে। তার ইচ্ছা গবেষক হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়া। ড্যান এবং পুরো পৃথিবী চমকে ওঠে যখন ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন ভবিষ্যত থেকে কিছু যোদ্ধা এসে বলে মানবজাতি হুমকির সম্মুখীন। অতীতের মানুষদের তারা যুদ্ধ করার জন্য ভবিষ্যতে আহ্বান করে।
মুভির মূল পটভুমিকা এখান থেকে শুরু হলেও ঘটনা কিন্তু আরো জটিল। ড্যান ফরেস্টারকে রিক্রুট করা হয় ভবিষ্যতের যুদ্ধের জন্য। সে তার মেয়ে এবং বউকে রেখে সাত দিনের জন্য ভবিষ্যতে পাড়ি জমায়। ফিরে আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ জেনে তার বউ চেষ্টা করে তাকে আটকানোর।
কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করতে ড্যান বর্তমান ত্যাগ করে। টুইস্ট শুরু হয় এখান থেকে।
যখনই কোন সিনেমার কথা শুনি যেখানে টাইম-ট্রাভেল আর এলিয়েন আছে, আনন্দে মনটা নেচে ওঠে। ক্রিস প্রাট আর জে কে সিমনস এর মত অভিনেতাকেও যখন মুভিতে দেখা যায় তখন ধরেই নিতে হয় ভালো কিছু একটা হবে। স্টার লর্ড এভেঞ্জারদের সাথে মারামারি করে পৃথিবী বাঁচালেও দেখা যাচ্ছে পৃথিবীর ভবিষ্যতের জন্য তাকে আরেকবার অস্ত্র ধরতে হবে।
টাইম ট্রাভেল করে অতীতে বা ভবিষ্যতে যাওয়াটা হলিউডের মুভিতে কোন ব্যাপার না। কিন্তু সেগুলোও এ্কটা সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা মেনে চলে, অন্তত মানানোর চেষ্টা করা হয়। এই মুভি টাইম-প্যরাডক্সের মা-বাপ এক করে ছেড়ে দিয়েছে। ইন্টারস্টেলার মুভির কথা চট করে মাথায় চলে আসলে ঝেড়ে ফেলুন।
সাইন্সের থোড়াই পরোয়া করে ড্যান ফরেস্টার ২৮ বছর ভবিষ্যতে গিয়ে তার মেয়ের সাথে দেখা করে। সেখানে সে জেনে নেয় কিভাবে সে মারা গেছে আর পরিবারের কি হাল-হকিকত হবে ৩০ বছর পরে। এরপর সে আবার অতীতে (মানে তার বর্তমানে) ফিরে আসে এলিয়েন মারার বায়ো-জেনেটিক অস্ত্র নিয়ে। … কি একটা অবস্থা!
এরপর তারা রাশিয়ায় যায় এলিয়েন মারতে, যারা আসলে অনেক আগে থেকেই পৃথিবীতে এসে বসে ছিল। মানুষ তাদের খুঁজে পায়নি, এরা সময়মতো মাটি ফুঁড়ে বের হয়েছে।
তাইতো মুভির শুরুতে আমার খটকা লেগেছিল! এই এলিয়েনরা কোথা থেকে এসেছে আর তাদের স্পেসশীপ কোথায়? আর তারা যদি স্পেস শীপে করেই এসে থাকে তবে এইরকম জন্তুর মত হুদাই মারামারি করছে কেন? এইখানে এসে আমার মাথায় “এলিয়েন” মুভিটার কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেও Predator জাতি পৃথিবীতে Alien দের নিয়ে এসেছিল শিকার শিকার খেলার জন্য।
The Tomorrow War (2021) এর এই নরখাদক এলিয়েনরাও দূর্ঘটনাবশত পৃথিবীতে চলে আসে। এবার বলুন গল্পের নতুনত্ব কোথায়! … নাই, তবে উপস্থাপনায় নতুনত্ব আছে। জঙ্গল আর গুহা বাদ দিয়ে এবার আধুনিক সভ্যতা আর বরফে এলিয়েন দের সাথে মারামারি হয়েছে।
আমি কিছুটা হতাশ, গল্পবিহীন মুভি যতই জ্যাক স্নাইডার স্টাইলে শুটিং হোক না কেন – একজন সাইফাই লাভার হিসেবে কিছু এলিমেন্ট খুঁজি যেটা এই মুভিতে পাইনি।
অভিনয় এরা ভালো করে সেটা সবাই জানি। ক্রিস প্রাট এর শিশুসুলভ চেহারার একশন দেখেও তাই মাঝে মধ্যে ভালো লাগে, কিন্তু পুরো মুভিটাই একটা কার্টুন এর মত লেগেছে আমার কাছে।
আপনার যদি একশন ভালো লাগে, সাথে এলিয়েন এর খামচা-খামচি, তবে এই মুভি দেখতে পারেন। কিন্তু সাই-ফাই মুভি হিসেবে কঠিন কিছু খুঁজতে গেলে হতাশ হবেন। যেভাবে এর ট্রেইলারে টাইম ট্রাভেলকে উপস্থাপন করা হয়েছে তার ধারে কাছেও মুভি নাই।
হলিউড বলেই পার পেয়ে যাচ্ছে। এর থেকে টম ক্রুজের “Edge of Tomorrow” তে টাইম ট্রাভেলকে (লুপ) অনেক ভালোভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।